ফরেক্স ট্রেডিং এর বৈধতা – অনেকেই আছেন, ফরেক্স ট্রেডিং শুরু করতে আগ্রহী কিন্তু বাংলাদেশে এই ফরেক্স ট্রেডিং বৈধ কিনা সেটি নিয়ে খুবই চিন্তার মধ্যে থাকেন। আজকের এই আর্টিকেল থেকে, বাংলাদেশে ফরেক্স ট্রেডিং বৈধ কিনা, সেটি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ফরেক্স ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ?
এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর আমাদের পক্ষ থেকে প্রদান করা সম্ভব নয়। কেননা, শুরুতেই বলেছি, ফরেক্স ট্রেডিং সম্পর্কে আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনও নীতিমালা এখন পর্যন্ত নেই। তবে আপনি হয়তোবা বিভিন্ন ব্লগ কিংবা গুগল সার্চ করলে দেখতে পাবেন, সেখানে লিখা আছে “ফরেক্স বাংলাদেশে বৈধ নয়”। বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে সত্য নয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন?
চলুন, আমরা এবার উত্তর খোজার চেষ্টা করি।
ফরেক্স কিংবা Foreign Exchange সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নীতিমালা রয়েছে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় আইন ১৯৪৭ অনুসারে, লাইসেন্সধারী ব্যাক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান ব্যাতিত ভিন্ন কোনও মাধ্যম থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কেনা-বেচা সম্পূর্ণ শাস্তি যোগ্য অপরাধ।
এখন আমরা ফরেক্স ট্রেডিং করার ক্ষেত্রে, যেই কাজটি করে থাকি সেটি হচ্ছে ভার্চুয়ালি কারেন্সিতে ট্রেড পজিশন গ্রহন করে থাকি। অর্থাৎ, বাস্তবিক অর্থে আমরা কোনও মুদ্রা ক্রয় কিংবা বিক্রয় করি না। অর্থাৎ, ১৯৪৭ সালের প্রণীত এই আইনের সাথে রিটেইল অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং এর কোনও সম্পৃক্ততা নেই।
যদি এমন হয়, আপনি ১০০ ডলার, নিজ প্রয়োজনে ক্রয় করবেন। এতে করে আপনাকে টাকার বিনিময়ে ডলার ক্রয় করতে হবে কোনও লোকাল ব্যাংক কিংবা মানি এক্সচেঞ্জার এর কাছ থেকে। এই এক্সচেঞ্জ যদি, লাইসেন্স নেই এমন প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তি হয়ে থাকে তাহলে তার নিকট থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় কিংবা এক্সচেঞ্জ করতে পারবেন না।
Foreign Exchange Act 1947
সর্বপ্রথমে আপনাকে বৈদেশিক মুদ্রার এই নীতিমালা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। আপনার সুবিধার জন্য এই নীতিমালার বিস্তারিত একটি কপি প্রদান করা হয়েছে। আপনি চাইলে, নীতিমালাটি সম্পূর্ণরূপে ডাউনলোড করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। ডাউনলোড লিংক – https://fxbd.co/act1947
নীতিমালাটি অনেক বড় এবং বিস্তারিত তাই সবকিছু এখানে লিখা সম্ভব নয়। আপনার সুবিধার জন্য শুধুমাত্র কয়েকটি বিষয় উপস্থাপন করছি।
- ফান্ড এক্সচেঞ্জ করার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক – নীতিমালায় বর্ণিত, Chapter 2 এর Section 1 এর তথ্য মতে, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের সাথে জড়িত সকলকে “Authorised Dealers (AD) এর লাইসেন্স গ্রহন করতে হবে।
- মানি এক্সচেঞ্জাররা সর্বাধিক ১০০০ ডলার পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রা একজনের কাছে বিক্রয় করতে পারবেন।
- এই নীতিমালা ক্যাশ বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। নীতিমালার কোথাও রিটেইল ফরেক্স ট্রেডিং ব্যাপারে কোনও উল্লেখ নেই।
আইন অনুসারে, লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে শুধুমাত্র ব্যাংক এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা এক্সচেঞ্জ করতে পারবেন, তবে যেহেতু কোনও ফরেক্স ব্রোকারই আমাদের দেশে অনুমদিত নয়, তাই আপনি চাইলে সরাসরি ব্যাংক থেকে ব্রোকারের অ্যাকাউন্টে ফান্ড ডিপোজিট করতে পারবেন না।
বাংলাদেশ থেকে বৈধ উপায়ে আপনি সর্বাধিক ১০,০০০ ডলার পরিমাণ অর্থ অনলাইনে ট্রানজেকশন করতে পারবেন এবং সেটি শুধুমাত্র ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। সেই হিসাবে আপনার যদি ক্রেডিট কার্ড থাকে তাহলেই কেবল আপনি বৈধ উপায়ে ব্রোকারে ফান্ড ডিপোজিট করতে পারবেন। এছাড়া, ভিন্ন আর কোনও মাধ্যম নেই।
অনেকেই ট্রেডে অর্থ বিনিয়োগ করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে থাকেন, যেমন
- অ্যাকাউন্ট থেকে অ্যাকাউন্টে ট্র্যান্সফার করার মাধ্যমে।
- বিকাশের মাধ্যমে ২য় কোনও পক্ষকে ডিপোজিট করে তারপর।
- ২য় কোনও পক্ষকে টাকা দিয়ে, ফান্ড ডিপোজিট করে নেয়া।
- খোলা মার্কেট থেকে স্ক্রিলের ডলার কিনে তারপর সেটিকে ফরেক্স ব্রোকারে ডিপোজিট করা।
আশা করি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেল সম্পর্কিত বিশেষ কোনও প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে পারেন কিংবা নিচে কমেন্ট করতে পারেন। প্রতিদিনের আপডেট ইমেইল এর মাধ্যমে গ্রহনের জন্য, নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করে নিতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো টিউটোরিয়াল দেখার জন্য অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। এছাড়াও, যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেইসবুক এবং টেলিগ্রাম চ্যানেলে। এছারাও ট্রেড শিখার জন্য জন্য আমাদের রয়েছে বিশেষায়িত অনলাইন ট্রেনিং পোর্টাল।