Divergence Trading Rules – ডাইভারজেন্স ট্রেডিং শুরু করার আগে, আপনাকে এই ট্রেডিং এর প্রধান নয়টি সূত্র মনে রাখতে হবে। আজকে আর্টিকেলে এই সূত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। একটা কথা মনে রাখবেন, আজকে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো সেগুলো আপনার অবশ্যই ভালো করে বুঝতে হবে।
আমরা আগেই ডাইভারজেন্স ট্রেডিং এর মূল বিষয় নিয়ে আপনাদেরকে জানিয়েছি, কিন্তু আপনি যদি সঠিক ভাবে ডাইভারজেন্স ট্রেডিং শিখতে কিংবা করতে চান তাহলে আজকের এই নয়টি প্রধান সূত্র আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে।
ডাইভারজেন্স ট্রেডিং এর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল সমুহ-
- ডাইভারজেন্স ট্রেডিং কি?
- ডাইভারজেন্স ট্রেড কিভাবে করবেন?
- ডাইভারজেন্স ট্রেডিং এর এর সঠিক সময়ে এন্ট্রি নেবার কৌশল
সুত্র-১, ভালো দৃষ্টিশক্তি
ভয় পাবার কিছুই নেই! আমরা এখানে কোনও প্রকারের ডাক্তারি টেস্ট এর কথা বলছি না। আমরা এখানে বোঝাতে চেয়েছি, ডাইভারজেন্স ট্রেডকে ভালো করে চিহ্নিত করতে পারা। অনেক সময় আমরা খুব তারাতারি কোনও ট্রেন্ড চিহ্নিত করার চেষ্টা করি যা আমাদের জন্য মাঝে মাঝে সর্বনাশের কারন হয়ে থাকে। ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে- “Little learning is a dangerous thing” একটি সঠিক ডাইভারজেন্স ট্রেড হবার জন্য মার্কেট প্রাইসকে অবশ্যই নিম্নোক্ত যেকোনও একটি বৈশিষ্ট্যের দরকার পরবেঃ
* পূর্বের হাই (high) এর থেকে মার্কেট প্রাইসের হাইয়ার-হাই (higher high)
* পূর্বের লো (low) এর থেকে মার্কেট প্রাইসের লোয়ার-লো (lower low)
* ডাবল টপ (double top)
* ডাবল বোটম (double bottom)
যদি আপনি আপনার চার্টে, উপরের চারটি বৈশিষ্ট্যের যে কোনও একটি বৈশিষ্ট্য দেখতে পান তাহলে আপনার ইন্ডিকেটরের দিকে তাকানোর কোনও দরকার নেই। যদি দেখতে না পান, তাহলে বুঝবেন প্রাইসে কোনও ডাইভারজেন্স ট্রেড গঠিত হয়নি। আপনি মরিচিকার পিছনে ছুটছেন এবং খুব দ্রুত একজন ভালো চোখের ডাক্তারের কাছে চলে যান, কারন আপনার দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
সঠিক ডাইভারজেন্স ট্রেন্ড
ভুল ডাইভারজেন্স ট্রেন্ড
সুত্র-২, সফলভাবে মার্কেট প্রাইসের টপ এবং বোটম লাইন আঁকুন
এখন আপনাকে মার্কেট প্রাইস একশন এর উপর নজর রাখতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার চার্টে আপনি একটি higher high, একটি flat high, একটি lower low, অথবা একটি flat low এগুলোর যেকোনো একটি দেখতে পারেন।
এখন আপনি চার্টে- পূর্ববর্তী হাই (high) কিংবা লো (low) থেকে মার্কেট প্রাইসের হাইয়ার-হাই (higher high) অথবা মার্কেট প্রাইসের লোয়ার-লো (lower low) বরাবর একটি লাইন আঁকুন, যেটা একটি প্রধান tops/bottom হবে।
সুত্র-৩, মার্কেট প্রাইসের TOPS এবং BOTTOMS কে যুক্ত করুন।
আপনি যখন দেখবেন চার্টে দুইটি সুইং হাই (high) তৈরি হয়েছে তখন আপনি দুইটি হাই/টপকে যুক্ত করবেন আর যদি দেখেন চার্টে দুইটি লো (low) তৈরি হয়েছে তাহলে দুইটি লো/বোটম কে একসাথে যুক্ত করুন। শুনতে একটু মূর্খের মতন লাগলেও একটা কথা মনে রাখবেন, পিপস সবসময় আপনাকে বিভ্রান্ত করবে। তাই ভুল জায়গায় এন্ট্রি নেবার আগে অবশ্যই একটি নির্ভুল ট্রেড নেয়ার জন্য যা যা করার প্রয়োজন আপনাকে তাই করতে হবে।
সঠিকভাবে যুক্ত টপ/TOP
ভুল ট্রেন্ডলাইন আঁকার চেষ্টা।
সুত্র-৪, মার্কেট প্রাইসের দিকে চোখ রাখুন।
আপনি এখন সম্পূর্ণভাবে প্রাইসের দুইটি টপ/Top অথবা দুইটি বোটম/Bottom কে যুক্ত করে একটি ট্রেন্ড লাইন এঁকে ফেলেছেন। এখন আপনি আপনার ইন্ডিকেটরের দিকে লক্ষ্য করুন (যেটা আপনি ব্যবহার করতে পছন্দ করেন) এবং মার্কেট প্রাইসের টপ/Top অথবা বোটম/Bottom এর সাথে ইন্ডিকেটরের টপ/Top অথবা বোটম/Bottom এর তুলনা করুন।
বিঃ দ্রঃ শুধুমাত্র ইন্ডিকেটরের টপ/Top অথবা বোটম/Bottom এর দিকে লক্ষ্য করুন, এছাড়া বাকি সবকিছু ভুলে যান।
সুত্র-৫, প্রাইস এবং ইন্ডিকেটরের মুভমেন্টের দিকে লক্ষ্য রাখা।
যদি আপনি মার্কেট প্রাইসের দুইটি হাই (high) কে যুক্ত করে একটি লাইন এঁকে থাকেন, তাহলে আপনাকে সেই সাথে অবশ্যই ইন্ডিকেটরের ও দুইটি হাই (high) কে যুক্ত করে একটি লাইন আঁকতে হবে। লো (low) এর ক্ষেত্রেও একই কাজ করবেন। যদি আপনি মার্কেট প্রাইসের দুইটি লো (low) কে যুক্ত করে একটি লাইন এঁকে থাকেন, তাহলে আপনাকে সেই সাথে অবশ্যই ইন্ডিকেটরের ও দুইটি লো (low) কে যুক্ত করে একটি লাইন আঁকতে হবে।
সঠিকভাবে যুক্ত মার্কেট প্রাইস এবং ইন্ডিকেটরের মুভমেন্ট
এক কথায়, মার্কেট প্রাইস এবং ইন্ডিকেটরের টপ/বোটম এর মধ্যে Perfect Match হতে হবে।
ভুলভাবে যুক্ত মার্কেট প্রাইস এবং ইন্ডিকেটরের মুভমেন্ট
সুত্র-৬, VERTICAL লাইন অংকন করা।
আপনি ইন্ডিকেটরের যে হাই অথবা লো খুজে পাবেন সেটা অবশ্যই মার্কেট প্রাইসের দিকে ঊর্ধ্বমুখী (vertical) ভাবে একই স্থানে হাই অথবা লো নির্দেশ করবে। নিচের চিত্রটি লক্ষ্য করুন।
সুত্র-৭, স্লোপ (slopes) অংকন করা।
Divergence Trading তখনি হবে- যদি ইন্ডিকেটরের টপ/বোটম (top/bottom) কে যুক্তকারী স্লোপ-লাইন, মার্কেট প্রাইসের টপ/বোটম (top/bottom) কে যুক্তকারী স্লোপ-লাইনের থেকে ভিন্ন হয়। এই স্লোপ-লাইন গুলো হয় Ascending (rising)-ঊর্ধ্বগামী, Descending (falling)-নিম্নগামী অথবা Flat-(সমান)
সুত্র-৮, যদি আপনি বাস মিস করেন তাহলে পরের টা ধরুন।
যদি আপনি আপনার চার্টে একটি Divergence Trading চিহ্নিত করতে পারেন কিন্তু যদি দেখেন মার্কেট আগেই বিপরীত-দিকে চলে গিয়েছে তাহলে মনে করবেন এবারের মতন ডাইভারজেন্স ট্রেন্ড হয়ে গেছে এবং আপনি এবারের মতন বাস মিস করে ফেলেছেন।
হতাশ হবার কিছুই আবার পরের ডাইভারজেন্স ট্রেন্ডের জন্য অপেক্ষা করুন।
সুত্র-৯, পর্যালোচনা
Divergence Trading সবচেয়ে ভালো কাজ করে লম্বা টাইম ফ্রেমে। বড় টাইম-ফ্রেমে ট্রেড করলে ভুল সিগন্যাল পাবার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। অর্থাৎ, কম ট্রেড করা কিন্তু আপনি যদি ভালো করে আপনার ট্রেডের কৌশল ঠিক করতে পারেন তাহলে কম ট্রেড করেও আপনি ভালো পরিমান প্রফিট করতে পারবেন। ছোট টাইম-ফ্রেমে ডাইভারজেন্স ট্রেন্ড অনেক বেশি পরিমাণ দেখা যায় কিন্তু এটার বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক কম থাকে।
আমরা আপনাকে পরামর্শ দিব কমপক্ষে ১-ঘণ্টা অথবা তার বেশি সময়ে ডাইভারজেন্স ট্রেন্ড চিহ্নিত করার চেষ্টা করবেন। অন্য অনেক ট্রেডার আছেন যারা, ১৫ মিনিটের অথবা তার থেকেও কম টাইমফ্রেমে ডাইভারজেন্স ট্রেড করে থাকেন।
আশা করি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেল সম্পর্কিত বিশেষ কোনও প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে পারেন কিংবা নিচে কমেন্ট করতে পারেন। প্রতিদিনের আপডেট ইমেইল এর মাধ্যমে গ্রহনের জন্য, নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করে নিতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো টিউটোরিয়াল দেখার জন্য অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। এছাড়াও, যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেইসবুক এবং টেলিগ্রাম চ্যানেলে। এছারাও ট্রেড শিখার জন্য জন্য আমাদের রয়েছে বিশেষায়িত অনলাইন ট্রেনিং পোর্টাল।