FXBangladesh.com – এই বছরের শুরু থেকেই মূল্যবান ধাতু হিসাবে পরিচিত GOLD এর প্রাইস ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ডে রয়েছে। যার কারনে এই মূল্যবান ধাতু বিগত কয়েক বছরের প্রাইস এর সকল রেকর্ড ব্রেক করে। এই বছরে 1518 থেকে প্রাইস শুরু হয়ে সরবচ্চ 1703 প্রাইস লেভেল স্পর্শ করে যা ২০১২ এর পর এটিই সর্বাধিক। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন?
আপনারা সবাই নিশ্চয় জানেন, গোল্ডকে বলা হয় –
“Safe Heaven Investment”
কিন্তু কেন?
সহজ কথায় যদি বলি, এটি এমন একটি বিনিয়োগ এর উৎস যা ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের আপদকালীন কিংবা খারাপ সময় মোকাবেলা করা যায়। যার কারনে, পৃথিবীর ৯৫ ভাগ কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুলো গোল্ড মজুদ করে রাখে। এবং যদি দেশে কোনও ধরনের বাজে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাহলে পরবর্তীতে এই মজুদকৃত গোল্ড ব্যবহার করে সেই খারাপ সময়কে কাটিয়ে উঠে যায়। যার কারনে, পৃথিবী জুড়ে গোল্ড এর চাহিদাও অনেক বেশী।
যারা গোল্ড এর ট্রেডিং করেন তাদের জন্য একটি উপদেশ দিয়ে রাখছিঃ যেকোনো ধরনের বৈশ্বিক অস্থিরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক টানাপড়েন এর কারনে বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশী পরিমাণ ঝুঁকেন গোল্ড এর উপরে যার কারনে বাস্তবিক অর্থে এর মূল্য বৃদ্ধি পায় কয়েকগুন। এই বছরটিও এর ব্যাতিক্রম নয়।
বছরের শুরুতে ইরান এর সাথে আমেরিকার যুদ্ধ পরিস্থিতি, চিন এর সাথে আমেরিকার বাণিজ্যিক অস্থিরতা এবং সবশেষে, বৈশ্বিক মাহামারি “Covid 19” এর সংক্রমণ, গোল্ড এর প্রাইস বৃদ্ধির মুল কারন এবং এখন পর্যন্ত সেটি বিদ্যমান রয়েছে। ইতিমধ্যেই এটি বিগত ৮ বছরের প্রাইস এর সকল রেকর্ড ভেঙে ফেলছে এবং এখন পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানেই রয়েছে। তবে আমরা কিছু ট্রেডিং পজিশন আন্দাজ করতে পারছি। এর জন্য প্রথমে চলুন চার্ট দেখে নেয়া যাক।
এটি XAU/USD এর H4 টাইমফ্রেম এর একটি রিয়েল টাইম চার্ট। আমরা শুরুতেই বলেছি, মার্কেট এর সার্বিক অবস্থান অনুসারে কিছু ট্রেডিং পজিশন গ্রহন করা যেতে পারে। মার্চ এর শুরু থেকে প্রাইস কিছূটা নিচের দিকে নেমে আসে এবং মার্চ এর ২০ তারিখ এর মধ্যে প্রতি আউন্স গোল্ড এর দর কমে যায় প্রায় $245 । যা বিগত ১৮ বছরের মধ্যে গোল্ড এর সবচেয়ে বড় দরপতন।
এরপর, মার্চ এর ২০ তারিখ থেকে প্রাইস আবার বৃদ্ধি পেয়ে, এপ্রিল এর ২০ তারিখে সেটি $1688 প্রাইস স্পর্শ করে বিগত সপ্তাহের কার্যদিবস শেষ করে। মার্কেট এর এমন পরিস্থিতে আমরা চার্টে একটি শক্তিশালী সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেল দেখতে পাচ্ছি।
বিগত সপ্তাহের গোল্ড এর প্রাইস চারে প্রদত্ত নীল রঙ (রেসিস্টেন্স) লেভেলকে স্পর্শ করে ঠিক এর কাছেই ক্লোজ হয়েছে যা আমাদের একটি পসিবল সেল ট্রেন্ড এর নির্দেশ করে। অন্যদিকে আমরা যদি RSI ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে তাহলে দেখতে পাবো, ইন্ডিকেটরটির রিডিং ইতিমধ্যেই overbought জোনে অবস্থান করছে সেই সাথে এটি আমাদের একটি পসিবল বেয়ারিশ ডাইভারজেন্স এর নির্দেশনা করছে। অর্থাৎ, SELL ।
ট্রেডিং পরামর্শ –
- H4 টাইমফ্রেম এর জন্য এনালাইসিসটি প্রদান করা হয়েছে।
- এই মুহূর্তে কোনও BUY/SELL এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকুন।
- প্রাইস যদি চার্টে প্রদত্ত শর্টটার্ম সাপোর্ট লেভেল অর্থাৎ 1685 এর নিচে ক্লোজ এবং অবস্থান করতে সক্ষম হয় তাহলে নতুন করে SELL এন্ট্রি গ্রহন করা যেতে পারে।
- প্রাইস এর পরবর্তী টার্গেট লেভেল হচ্ছে 1660 এর কাছাকাছি। এবং যদি প্রাইস কোনওভাবে এই লেভেলকে নিচে ব্রেক করতে সক্ষম হয় তাহলে বিদ্যমান আপট্রেন্ড, ডাউনট্রেন্ডে পরিবর্তিত হবার সম্ভাবনা থাকবে।
- প্রাইস যদি কোনও ভাবে 1692 ব্রেক করতে পারে তাহলে পসিবল টার্গেট লেভেল হচ্ছে 1703 (পূর্বের হাই লেভেল)
- H4 এর ক্যান্ডেল যদি কোনওভাবে 1703 এর উপরে ক্লোজ হতে পারে তাহলে ধরে নিতে হবে, প্রাইস আরও বেশী ঊর্ধ্বমুখী হবে। সুতরাং এটিই হবে সেল এন্ট্রির জন্য স্টপলস।
Covid19 সতর্কতা
ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রায় ১৯৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মহামারি এই ভাইরাস যার কারনে বড় বড় সকল দেশের স্টকমার্কেট এর সুচক কমছে ক্রমান্বয়ে। এমতাবস্থায়, ট্রেডিং এর সময় এবং এন্ট্রি পজিশন কম নেয়ার জন্য অনুরধ করছি আমরা এবং বিদ্যমান কোনও এন্ট্রি স্টপলস ছাড়া না রাখার পরামর্শ প্রদান করছি। কেননা, বিদ্যমান এই পরিস্থিতিতে আমরা যেকোনো ধরনের স্লিপেজ, প্রাইস গ্যাপ, কিংবা বড় ধরনের অস্বাভাবিক মুভমেন্টও দেখতে পারি। সুতরাং, নিজে সতর্ক থাকুন এবং ট্রেডিং এর জন্য পর্যাপ্ত মার্জিন এর ব্যবস্থা করে রাখুন।
ঝুঁকি সতর্কতা
ফরেক্স ট্রেডিং একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ মাধ্যম। প্রকাশিত এই এনালাইসিস শুধুমাত্র আপনাকে মার্কেটের বিদ্যমান একটি ধারণা প্রদানের জন্য দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র, এই এনালাইসিস এর উপর ভিত্তি করেই কোনও ধরনের ট্রেডে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার কোনও ধরনের লস/ক্ষতির দায়ভার FX Bangladesh গ্রহন করবে না। বিস্তারিত জানার জন্য অনুগ্রহ করে আমাদের Risk Warning আর্টিকেলটি পড়ে নিন।