GBP কারেন্সি পেয়ার – স্পট ফরেক্স মার্কেটের কারেন্সি ট্রেডিং সেকশনে মুলত ট্রেডাররা যেসকল কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করেন তাদের মধ্যে GBP এর গুরুত্ব অপরিসীম। অনেক ট্রেডারের পছন্দের তালিকায় GBP কারেন্সি পেয়ারগুলো থাকে কেননা এই কারেন্সি পেয়ারগুলোর মুভমেন্ট অনেকবেশী থাকে যার কারনে ট্রেডাররা খুব সহজেই এন্ট্রি থেকে প্রফিট করতে সক্ষম হয়।
তবে অন্যান্য কারেন্সি পেয়ারগুলোর ন্যায় GBP কারেন্সি পেয়ারগুলোতে ট্রেড করতে কিছুটা সতর্ক থাকতে হয়। আজকের আর্টিকেলে কিভাবে পাউন্ডের সাথে সম্পর্কিত কারেন্সি পেয়ারগুলোতে ট্রেড করবেন সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো।
ভিন্ন কারেন্সির জন্য ভিন্ন কৌশল!
আপনার মনে হতে পারে, কারেন্সি পেয়ারে ট্রেডিং সিস্টেম – সকল কারেন্সির পেয়ারের জন্যই এক রকমের হয়। তাহলে আপনারা কেন বলছেন, GBP কারেন্সি পেয়ারগুলোর জন্য ভিন্ন ভাবে কৌশল নির্ধারণ করতে?
আপনি যদি চিন্তা করেন, এক ধরনের কৌশল ব্যবহার করে সকল ধরনের কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করবেন, তাহলে আপনাকে বোকা বলা ছাড়া, আমাদের কাছে ভিন্ন কোনও শব্দ নেই। বিষয়টি স্পষ্ট করে বলছি।
ফুটবল বিশ্বকাপ চলছে, এখন ধরুন জার্মানির সাথে ইরানের খেলা রয়েছে। আমরা সবাই জানি ইরান, জার্মানির থেকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল একটি দল। সুতরাং, স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিব, এই ম্যাচে জার্মানি, ইরানের বিপক্ষে জয় লাভ করবে (যদি না কোনও অঘটন হয়)। এখন এই ম্যাচের জন্য, জার্মানির খেলার কৌশল হবে কিছুটা ভিন্ন। কেননা জার্মানি দল চাইবে, তাদের স্কোয়াডে বিদ্যমান স্টার খেলোয়াড়দের কিছুটা বিশ্রাম দিয়ে ম্যাচটা খেলতে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন স্টার খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিয়ে ম্যাচ খেলবে জার্মানি? তাহলে কি ইরানকে, জার্মানি অবজ্ঞা করে? বিষয়টি এরকম নয়! ইরান যেহেতু অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল তাই কোনও শক্তিশালী দল চাইবে না, এই ম্যাচে তাদের কোনও স্টার খেলোয়াড় ব্যাথা পেয়ে ইনজুরিতে পড়ুক। তাই পারতপক্ষে শক্তিশালী দলগুলো স্টার কিংবা প্রভাবশালী খেলোয়াড়দের বিরত রাখার চেষ্টা করে। এটাই নিয়ম।
এখন এই ম্যাচটি যদি ইরান না হয়ে পর্তুগাল কিংবা ইংল্যান্ড এর সাথে হত, তাহলে বিষয়টি কি রকম দাঁড়াবে? জার্মানি পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই ম্যাচটি খেলবে। কেননা এই দুইটি দলই শক্তিশালী এবং এদের বিপক্ষে জয় পাওয়া, মোটেও সহজ কাজ নয়।
এখন একটু ভাল করে চিন্তা করে দেখুন, দুই ধরনের দলের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য জার্মানির কৌশল কিন্তু দুই রকমের হবে। খেলোয়াড় নির্বাচন থেকে শুরু করে, খেলার ফরমেশন, কৌশল সবকিছুই হবে ভিন্ন।
তাহলে আপনি কেন, এক ধরনের ট্রেডিং কৌশল ব্যবহার করে ভিন্ন ভিন্ন কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করবেন?
আশা করছি, আমরা যা বোঝাতে চেয়েছি, সেটি আপনি বুঝতে পেরেছেন। সবসময় কারেন্সি পেয়ারের ধরনের উপর ভিত্তি করে ট্রেডিং কৌশল নির্ধারণ করে নিতে হবে। এটি একজন ভালো ট্রেডারের বিশেষ গুণ। আপনি যদি একাধিক কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করতে পছন্দ করেন তাহলে আপনার ট্রেডিং কৌশলও হবে ভিন্ন ভিন্ন।
আশা করছি, এতক্ষনে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন কেন ভিন্ন ভিন্ন কারেন্সি পেয়ারের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ট্রেডিং কৌশল ব্যবহার করতে হবে।
GBP কারেন্সি পরিচিতি
Great Britain Pound কিংবা সংক্ষেপে GBP হচ্ছে যুক্তরাজ্যের মুদ্রার নাম। যেটি আবার “পাউন্ড” কিংবা “স্টারলিং” নামেও পরিচিত। স্পট ফরেক্স ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে পাউন্ড এর প্রভাব অনেক বেশী। কেননা ২০১৬ সালে সংঘঠিত “BREXIT” চুক্তির পূর্ব পর্যন্ত, যুক্তরাজ্যই ছিল সম্পূর্ণ ইউরোপের একমাত্র আধিপত্য বিস্তারকারী দেশ। এছাড়াও, ব্রিটেন এর অর্থনীতির আকার অনেক বড় হবার কারনে, বিনিয়োগকারীরা এই দেশের বিনিয়োগ করতেও অনেক বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
শক্তিশালী আর্থিক ব্যবস্থা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বৃহৎ আকৃতির শেয়ার বাঁজার, ইউরোপের এককছত্র আধিপত্য বিস্তারকারী দেশ, ইত্যাদি বিষয়গুলোর কারনে ২০১৭ সালের পূর্ব পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কাছে পাউন্ডের চাহিদা ছিল আকাশচুম্বি।
এমনকি মার্কিন ডলার (USD) এবং ইউরোর (EUR) পরেই ছিল পাউন্ডের অবস্থান। আপনি যদি GBP কারেন্সির গত ১০ বছরের গ্রাফ দেখেন তাহলে বিষয়টি বুঝতে পারবেন। তবে এখনকার সময়, সম্পূর্ণই ভিন্ন!
BREXIT চুক্তির মাধ্যমে ইউরোপের সাথে ৪০ বছরের সম্পর্কের ইতি, টাল-মাটাল অর্থনীতি, সরকার প্রধানদের দায়িত্ব নিয়ে অসন্তোষজনক অবস্থান, অর্থনীতির পুনরুদ্ধার, ৩২ বছরের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতির রেকর্ড, ডলারের বিপরীতে ৩০ বছরের মধ্যে পাউন্ডের সর্বাধিক দরপতন, কোভিড ১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন এর মধ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির কারনে সবথেকে খারাপ সময় পার করছে যুক্তরাজ্য।
এই কারনে, পাউন্ডের পূর্বের ভ্যালু এবং বর্তমানের ভ্যালুর মধ্যে পার্থক্যও হয়েছে আকাশ-পাতাল। এরপরও বিনিয়োগকারীদের কাছে পাউন্ডের জনপ্রিয়তা একদমই হ্রাস পায়নি। এই আর্টিকেলটি থেকে সেটির কারনও আমরা খোজার চেষ্টা করবো। তবে প্রথমে জেনে নেই, GBP কারেন্সি পেয়ারের মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় কিছু কারেন্সি পেয়ারের নাম।
GBP কারেন্সি পেয়ার
প্রায় সকল ব্রোকারই, বিভিন্ন ধরনের GBP কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করার সুবিধা প্রদান করে থাকে। তবে এদের মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় কিছু কারেন্সি পেয়ারের নাম উল্লেখ করছি।
- GBP/USD
- GBP/JPY
- EUR/GBP
যেহেতু GBP/USD কারেন্সি পেয়ারটি মেজর কারেন্সি পেয়ার হিসাবে নির্ধারিত, তাই ট্রেডাররাও সবথেকে বেশী পরিমাণ ট্রেড করে, এই কারেন্সি পেয়ারটিতে। আমরাও ট্রেড করার জন্য সবথেকে বেশী পরিমাণ ব্যবহার করি এই GBP/USD কারেন্সি পেয়ার।
মনে হতে পারে, কেন ট্রেড করার জন্য এই GBP কারেন্সি পেয়ার নির্বাচন করবেন?
পাউন্ড পেয়ারের সুবিধা:
মুভমেন্টের ব্যাপকতা – অন্যান্য কারেন্সি পেয়ারের থেকে পাউন্ডের কারেন্সি পেয়ারগুলোতে বিশেষ করে GBP/USD এবং GBP/JPY এই পেয়ার দুইটিতে এভারেজ মুভমেন্টের পরিমাণ, ফরেক্স মার্কেটে বিদ্যমান অন্যান্য কারেন্সি পেয়ারের তুলনায় অনেক বেশী পরিমাণে হয়। মুভমেন্ট বেশী হবার কারনে প্রাইস, প্রচুর পরিমাণে ট্রেন্ডে অবস্থান করে ফলে ট্রেডাররাও অপেক্ষাকৃত বেশী পরিমাণ প্রফিট করতে সক্ষম হয়।
কম স্প্রেড – GBP/USD মেজর কারেন্সি হবার কারনে, এই পেয়ারে স্প্রেডের পরিমাণ থাকে অনেক কম। তাই ট্রেডাররা স্বাচ্ছন্দ্যে কম স্প্রেড ব্যবহার করে ট্রেড করার সুবিধা পান।
ট্রেন্ডি কারেন্সি – বেশীরভাগ সময়ই GBP কারেন্সি পেয়ারগুলো মুলত নির্দিষ্ট ট্রেন্ডে অবস্থান করতে থাকে। যদি আপনি কারেন্সি পেয়ারের বড় টাইমফ্রেমগুলো যেমন H4 কিংবা Daily চার্ট ভালো করে দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন, GBP পেয়ারগুলো ট্রেন্ডের মধ্যেই বেশীরভাগ সময় অবস্থান করে থাকে। প্রাইস যেহেতু ট্রেন্ডে অবস্থান করে তাই ট্রেডারও তখন সেই ট্রেন্ড চিহ্নিত করার মাধ্যমে ভালো এন্ট্রি পজিশন গ্রহন করতে পারে।
মুভমেন্ট বেশী তাই প্রফিটও বেশী – এন্ট্রি নিয়েছেন, এখন যদি কারেন্সির প্রাইস মুভমেন্ট না করে তাহলে প্রফিট হবে কি করে? এক্ষেত্রে GBP কারেন্সি আপনাকে হতাশ করবে না। আমাদের ট্রেডিং অভিজ্ঞতা অনুসারে GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের দৈনিক এভারেজ মুভমেন্টের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় 100 পিপ্স।
অন্যদিকে, GBP/JPY কারেন্সি পেয়ারের দৈনিক এভারেজ মুভমেন্টের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় 150 পিপ্স। এটি এভারেজ মুভমেন্টের কথা বলেছি মাত্র। এমনও হতে পারে, ৩০০-৪০০ পিপ্স পর্যন্ত মুভমেন্ট দেখতে পাবেন। যতবেশী মুভমেন্ট ততবেশী প্রফিটের চান্স বেশী থাকে।
GBP ট্রেডিং এর করণীয়
আপনি যদি ট্রেড করার জন্য GBP কারেন্সি পেয়ার নির্বাচন করেন তাহলে অবশ্যই নিচের বিষয়গুলো মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছি। এই পরামর্শগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যালেন্স: পাউন্ডে কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করার জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আপনার ট্রেডিং ব্যালেন্স। যেহেতু GBP এর পেয়ারগুলোর মুভমেন্টের পরিমাণ অনেকবেশী হয়ে থাকে, তাই যাদের ব্যালেন্সের পরিমাণ কম, তাদের জন্য এই কারেন্সি ট্রেডিং, অনেকবেশী বিপদজনক হতে পারে।
সঠিক সময় নির্বাচন: সময়ের নির্বাচন GBP কারেন্সিতে ট্রেড করার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে সময় বলতে, দিনের ঠিক কোন সময়ে আপনি এই কারেন্সিতে ট্রেড করবেন সেটির কথা বলছি।
GBP পেয়ারগুলো ট্রেড করার আদর্শ সময় হচ্ছে যখন মুলত London Stock Exchange এর মার্কেট ওপেন হয়। বাংলাদেশ সময় দুপুর ০১ঃ৩০ মিনিটে মুলত লন্ডন স্টক মার্কেট ওপেন হয় এবং সেটি সন্ধ্যা ৬ঃ৩০ মিনিট পর্যন্ত ওপেন থাকে। এই সময়টিতেই মুলত GBP পেয়ারের সবথেকে বেশী মুভমেন্ট লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও, নিউইয়র্ক স্টক মার্কেট ওপেনিং টাইম সন্ধ্যা ০৬ঃ৩০ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত GBP পেয়ারে মুভমেন্ট লক্ষ্য করবেন।
এই সময় ব্যাতিত দিনের অন্য কোনও সময়ে GBP পেয়ারে ট্রেড করার প্রয়োজন নেই। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
এছাড়াও, কোন সময় ট্রেড করার জন্য আদর্শ সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন Forex Basic ট্রেনিং কোর্সটি থেকে। ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমে চাইলে কোর্সটিতে অংশ নিতে পারেন।
টাইমফ্রেম নির্বাচন: GBP পেয়ারে ট্রেড করার জন্য টাইমফ্রেমের নির্বাচন অনেকবেশী গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি চাইলে যেকোনো টাইমফ্রেম নির্বাচন করেই ট্রেড করতে পারেন, তবে যদি ভাল এন্ট্রি পজিশন গ্রহন করতে হয় তাহলে অবশ্যই ট্রেড করার জন্য কমপক্ষে H4 টাইমফ্রেমের চার্ট দেখে, তারপর ট্রেড করতে হবে। এর থেকে কম টাইমফ্রেম নির্বাচন করেও আপনি চাইলে ট্রেড করতে পারবেন. তবে সেটির ক্ষেত্রে রিস্ক এর পরিমাণ অনেক বেশী থাকবে।
টাইমফ্রেম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য আমাদের একটি বিশেষ ট্রেনিং কোর্স রয়েছে। পরামর্শ থাকবে কোর্সটিতে অংশ নিয়ে বিস্তারিত শিখে নেয়ার। এই জন্য আপনি চাইলে Timeframe Analysis কোর্সটি দেখতে পারেন।
লট সাইজ নির্ধারণ: সঠিক লট কিংবা ভলিউম নির্বাচন না করে যদি ট্রেড করেন তাহলে বুঝতেই পারবেন না, GBP কারেন্সি কিভাবে আপনার অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্সকে শেষ করে দিচ্ছে। সঠিক লট সাইজ নির্ধারণ অনেক জটিল একটি বিষয়, সেটি নিয়ে অন্য কোনও আরটিকেলে আলোচনা হবে। তবে এতটুকু মনে রাখবেন, প্রতি ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলে আপনি সর্বাধিক 0.05 স্ট্যান্ডার্ড লটের এন্ট্রি নিতে পারবেন। যদি আপনার ব্যালেন্সের পরিমাণ ১০০০ ডলার হয়ে থাকে তাহলে আপনার সর্বাধিক লটের পরিমাণ হবে 0.10 স্ট্যান্ডার্ড লট।
লট কিংবা ভলিউম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য অনুগ্রহ করে Forex Lot এই আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের লটের ক্যালকুলেশন সম্পর্কে বুঝতে পারবেন।
স্টপলস অর্ডার: স্টপলস অর্ডার ব্যাতিত GBP এর কোনও কারেন্সি পেয়ারেই ট্রেড করা যাবেনা। কারেন্সি পেয়ারগুলো যেহেতু প্রায়ই অস্বাভাবিক মুভমেন্ট করে, তাই যদি আপনি স্টপলস অর্ডার ব্যবহার করা ব্যতীত ট্রেড করেন, তাহলে বড় আকারের লসের সম্মুখীন হতে হবে।
ট্রেডিং প্যাটার্ন
স্কাল্পিং কিংবা লম্বা সময়ের ট্রেডারদের জন্য GBP/USD কারেন্সি পেয়ারটি অনেক জনপ্রিয়। যেকোনো ধরনের ট্রেডারই এই কারেন্সি পেয়ারটিতে প্রফিটেবল এন্ট্রি গ্রহন করতে পারেন। এই অংশে, আপনাদের ট্রেড করার কিছু নির্দেশনা প্রদান করছি।
মনে রাখবেন, এখানে যেই পরামর্শগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটি সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করবে, আপনার ট্রেডিং অভিজ্ঞতা এবং কউশলের উপর। আমাদের এই পরামর্শগুলো ব্যবহার করলেই, আপনি প্রফিট করতে পারবেন সেটি চিন্তা করার কোনও কারন নেই।
- টেকনিক্যাল টুল: বিভিন্ন ধরনের টেকনিক্যাল টুল যেমন, সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স, চার্ট প্যাটার্ন, ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন, মুভিং এভারেজ ইত্যাদি টুলগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে ভালো মানের এনালাইসিস করতে পারবেন। অর্থাৎ, উল্লেখিত এই বিষয়গুলো আপনার জন্য অত্যাবশ্যকীয়।
- টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর: আমাদের প্রাপ্ত ট্রেডিং অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এই কারেন্সি পেয়ারটিতে ইন্ডিকেটর তেমন ভালো কাজ করেনা। বিশেষ করে যারা, ছোট সময়ের ট্রেড করে থাকেন, তাদের জন্য আমদের পরামর্শ হচ্ছে, প্রাইস অ্যাকশন এর ভিত্তিতে এন্ট্রি গ্রহন করা। বিশেষ কোনও ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে খুব ভালো এবং প্রফিটেবল সিগন্যাল পাবেন, সেটি বলতে পারছিনা। প্রাইস অ্যাকশন সম্পর্কে জানতে, আমাদের বিশেষ ভিডিও টিউটোরিয়াল রয়েছে, চাইলে সেটি দেখে নিতে পারেন।
- বাউন্স এবং ব্রেকআউট: ট্রেডিং কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বাউন্স এবং ব্রেকআউট কৌশলের মাধ্যমে এন্ট্রি গ্রহন। এই দুইটি কৌশল সম্পর্কে আপনার অবশ্যই ভালো ধারনা থাকতে হবে। বাউন্স এবং ব্রেকআউট ট্রেডিং কৌশল সম্পর্কে জানার জন্য অনুগ্রহ করে ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে নিতে পারেন। অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ভিজিট করে দেখুন। লিংক – https://fxbd.co/youtube
- ছোট সময়ের ট্রেডিং: যারা ছোট সময়ের ট্রেড করতে আগ্রহী, তারা উল্লেখিত এই টাইমফ্রেমগুলো বিবেচনায় রেখে তারপর ট্রেড করতে পারেন। ৩০ মিনিটের টাইমফ্রেম ব্যবহার করে এনালাইসিস করবেন এবং ৫-১৫ মিনিটের টাইমফ্রেম ব্যবহার করে ট্রেড করার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও, ছোট সময়ের ট্রেড করার ক্ষেত্রে, মুভিং এভারেজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। এই জন্য সেটিও ব্যবহার করে দেখতে পারেন। মুভিং এভারেজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই ট্রেনিং কোর্সটি থেকে।
- বড় সময়ের ট্রেডিং: যারা বড় সময় অর্থাৎ, বড় টাইমফ্রেমে ট্রেড করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য পরামর্শ হচ্চে, কমপক্ষে Daily টাইমফ্রেমে মার্কেট এনালাইসিস করবেন এবং H4 টাইমফ্রেমে ট্রেডিং পজিশন গ্রহন করবেন। এতে করে আপনি ভাল মানের এন্ট্রি গ্রহন করার সুবিধা পাবেন এবং ঝুঁকির পরিমানও কিছুটা কম থাকবে।
পরামর্শ
এতক্ষণ ধরে কেন, কি কারনে এবং কি কি বিষয় মেনে GBP কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করবেন সেটির আলোচনা করেছি। আশা করছি বিষয়গুলো সহজেই আপনার জন্য উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এখন কিছু দিক নির্দেশনা প্রদান করবো যেগুলো আমাদের নিজ ট্রেডিং অভিজ্ঞতার আলোকে উপস্থাপন করছি।
- ডলার (USD) এর সাথে সম্পৃক্ত যেকোনো ধরনের কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করার জন্য, অবশ্যই আপনাকে ডলার ইনডেক্স (যা ডলারের শক্তির নির্ণায়ক হিসাবে কাজ করে) এর উপর লক্ষ্য রাখতে হবে। অর্থাৎ, ডলারের শক্তি কমছে নাকি বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেটি যদি নির্ণয় করতে পারেন। তাহলে GBP/USD কারেন্সি পেয়ারে এন্টি গ্রহন করা আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। সবসময়ই মনে রাখবেন, ডলার ইনডেক্স এর সাথে GBP এর সম্পর্ক হচ্ছে ঠিক বিপরীতমুখী। অর্থাৎ, ডলার ইনডেক্স এর শক্তি যদি বৃদ্ধি পায়, তাহলে ডলারের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে GBP/USD কারেন্সি পেয়ারটির মুভমেন্ট হবে নিচের দিকে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। ইনডেক্স সম্পর্কে আমাদের একটি বিশেষ ট্রেনিং কোর্স রয়েছে। চাইলে কোর্সটিতে অংশ নিতে পারেন। লিংক – https://fxbd.co/dindex
- আপনি যদি GBP পেয়ারে ট্রেড করতে চান, তাহলে শুধুমাত্র GBP/USD কারেন্সি পেয়ারেই ট্রেড করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন। GBP/JPY এবং EUR/GBP কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডিং সিস্টেম এবং কৌশল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই দুইটি কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করার বিস্তারিত ভিন্ন আর্টিকেলে উপস্থাপন করবো।
- ভুলেও GBP/JPY কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করতে যাবেন না। বিশেষ করে যারা নতুন হিসাবে ট্রেডিং শুরু করেছেন এবং মার্কেট সম্পর্কে অভিজ্ঞতা কম, তারা অবশ্যই GBP/JPY কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করা থেকে বিরত থাকবেন।
- আপনি যদি ট্রেডিং অ্যাকাউন্টে GBP পেয়ারে ট্রেড করেন তাহলে সেই অ্যাকাউন্টে ভিন্ন আর কোনও ধরনের কারেন্সি পেয়ারে এন্ট্রি গ্রহন করবেন না। অর্থাৎ, GBP পেয়ার শুধুমাত্র সেটিতেই আপনাকে লেগে থাকতে হবে।
- আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, কমপক্ষে ১ ঘন্টার টাইমফ্রেম অনুসরণ করে, মার্কেট এনালাইসিস করার চেষ্টা করবেন। H4 টাইমফ্রেম পছন্দ করলে আরও ভালো হয়। মনে রাখবেন, টাইমফ্রেমের পরিমাণ যত বড় হবে, সিগন্যাল এর শক্তিও হবে ততবেশী।
- ৫০০ ডলারের নিচে অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স নিয়ে GBP এর কোনও কারেন্সি পেয়ারে এন্ট্রি গ্রহন করবেন না। সেক্ষেত্রে প্রতি ৫০০ ডলার ব্যালেন্সের জন্য আপনার লট সাইজ হবে 0.05. যদি ব্যালেন্সের পরিমাণ ১০০০ ডলার হয় তাহলে লট সাইজ হবে 0.10 (সর্বাধিক)
- প্রতি সপ্তাহের মার্কেট শুরু হবার দিন অর্থাৎ, সোমবার নিউইয়র্ক স্টক মার্কেট ওপেন হবার আগে অর্থাৎ, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ০৬ঃ০০ পূর্বে GBP পেয়ারে নতুন করে কোনও এন্ট্রি গহন করা যাবেনা। প্রয়োজনে সারাদিন Netflix, YouTube দেখে সময় কাটাবেন। কিন্তু সন্ধার আগে এন্ট্রি গ্রহন করবেন না।
- প্রতি সপ্তাহের মার্কেট ক্লোজিং এর দিন অর্থাৎ, শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯ টার পর, GBP পেয়ারে নতুন করে এন্ট্রি গ্রহন করবেন না। কেননা মার্কেট বন্ধ হয়ে গেলে পরের সপ্তাহে কি পরিমাণ প্রাইস গ্যাপে শুরু হবে সেটির কোনও নিশ্চয়তা নেই।
- সবসময় সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেলগুলোতে এন্ট্রি গ্রহন করবেন। যদি প্রাইসের কোনও লেভেল খুঁজে না পান, তাহলে এন্ট্রি গ্রহন করবেন না। সহজ কথায়, প্রাইস যদি সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেলের মধ্যবর্তী অবস্থানে থাকে তাহলে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকুন।
- একটি এন্ট্রির জন্য সর্বাধিক ৫০ পিপ্স পরিমাণ লস রাখবেন। এর উপরে হলে এন্ট্রি ক্লোজ করে ফেলবেন কিংবা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এন্ট্রি এডজাস্ট করে নিবেন। GBP পেয়ারের কোনও ভরসা নেই। আপনি ৫০ পিপ্স লসে এন্ট্রি ক্লোজ করে চিন্তা করলেন, কিছুটা নেমে আসলে লসেই ক্লোজ করে দিবেন। কিন্তু দেখা গেল মুভমেন্টের কারনে সেই লসের পরিমাণ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৫০০ পিপ্স হয়ে গেছে।
- GBP পেয়ারে এন্ট্রি গ্রহন করার জন্য, মার্কেট সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান, এনালাইসিস করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এছাড়াও, আমাদের এনালাইসিস সেবা রয়েছে যেখানে নিয়মিত GBP কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডিং আপডেট ফ্রিতে জানতে পারবেন। এই জন্য চাইলে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যুক্ত হয়ে নিতে পারেন। লিংক – https://fxbd.co/telegram
এতক্ষন পর্যন্ত এই আর্টিকেলটিতে আমরা কিন্তু বিশেষ কোনও ট্রেডিং কৌশল নিয়ে আলচনা করিনি। আমরা শুধুমাত্র বোঝানোর চেষ্টা করেছি, GBP পেয়ারগুলোতে ট্রেড করতে হলে আপনার কি কি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ট্রেডিং করার কৌশল, মাধ্যম ট্রেডার হিসাবে আপনাকেই সেট করে নিতে হিবে। কেননা, এক এক ট্রেডার এক এক নিয়মে ট্রেড করে থাকেন।
GBP অবশ্যই অনেকবেশী প্রফিটেবল একটি কারেন্সি পেয়ার। মুভমেন্টের পরিমাণ বেশী হবার কারনে আমাদের পছন্দের তালিকায় সবথেকে উপরে হচ্ছে এই GBP. তবে মুভমেন্টের পরিমাণ যেহেতু বেশী থাকে তাই এই কারেন্সিগুলোতে লসের পরিমাণও তুলনামূলক বেশী হবার সম্ভাবনা থাকে। তবে আপনি যদি বিষয়গুলো খেয়াল করে, আমাদের উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে তারপর GBP কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করেন, তাহলে কথা দিচ্ছি লসের থেকে আপনি দূরে অবস্থান করতে সক্ষম হবেন।
আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে, নিচের কমেন্ট সেকশনে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা চেষ্টা করবো সেটির সঠিক নির্দেশনা প্রদান করার জন্য।
আশা করি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেল সম্পর্কিত বিশেষ কোনও প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে পারেন কিংবা নিচে কমেন্ট করতে পারেন। প্রতিদিনের আপডেট ইমেইল এর মাধ্যমে গ্রহনের জন্য, নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করে নিতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো টিউটোরিয়াল দেখার জন্য অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। এছাড়াও, যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেইসবুক এবং টেলিগ্রাম চ্যানেলে। এছারাও ট্রেড শিখার জন্য জন্য আমাদের রয়েছে বিশেষায়িত অনলাইন ট্রেনিং পোর্টাল।