ইতিমধ্যেই আপনার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডিকেটর সম্পর্কে জেনেছেন এবং এদের আলাদা আলাদা ব্যাবহার সম্পর্কেও দেখেছেন। কোর্সের শুরু থেকেই আমরা বলে আসছি, ফরেক্স ট্রেড এর সাথে সম্ভাবনা কথাটি অনেক বেশী পরিমান জড়িত। এক এক জন দক্ষ ট্রেডার এর কাজ হচ্ছে এই সম্ভাবনা শব্দটিকে বাস্তবে রূপান্তরিত করা।
বিভিন্ন ট্রেডার বিভিন্ন ভাবে এই ইন্ডিকেটর গুলো একসাথে ট্রেড করার জন্য ব্যাবহার করে থাকেন। আমরাও আজকে শিখবো। কিভাবে Multiple Indicator ব্যাবহার করে ট্রেড করা যায়! এবং কিভাবে এরা সিগন্যাল প্রদান করে থাকে।
প্রতিটি ইন্ডিকেটর এর মার্কেট প্রাইস এর সাথে মুভ করে থাকে তবে তাদের এই মুভমেন্ট একই রকম হয় না। এক এক ইন্ডিকেটর এক এক ধরনের সিগন্যাল প্রদান করে থাকে। চলুন তাহলে শুরু করি-
Bollinger Bands + Stochastic
একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি বিশ্লেষণ করা যাক! আমরা নিচের চিত্রে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের H4 টাইমফ্রেমে Bollinger bands এবং Stochastic দুইটি ইন্ডিকেটর একই সাথে ব্যাবহার করবো এবং দেখব কি ধরনের সিগন্যাল পাওয়া যায়!
চিত্রে দেখতে পাচ্ছি, প্রাইস একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যেই ঘুরাঘুরি করছে যাকে ফরেক্স মার্কেটের ভাষায় বলা হয় রেঞ্জিং মুভমেন্ট। সুতরাং এই ধরনের পজিশনে Bollinger bands ভালো সিগন্যাল প্রদান করে থাকে। তাই আমরা এই চার্টের মধ্যে Bollinger bands এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং ফর্মুলা Bollinger bounce এর মাধ্যমে ট্রেডে এন্ট্রি নেয়ার চেষ্টা করবো।
লক্ষ্য করুন, কিভাবে Bollinger Bands এবং Stochastic দুইটি ইন্ডিকেটর একই সাথে সেল/Sell সিগন্যাল প্রদান করেছে।
EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের প্রাইস, উপরের ব্যান্ডে চলে আসে যা একটি রেসিস্টেন্স হিসাবে কাজ করছিল। ঠিক একই সময়, Stochastic এর ভ্যালুও চলে আসে overbought লেভেল, যা নির্দেশ করে প্রাইস যেকোনো সময় নিচের দিকে নেমে আসবে।
কি দেখলেন?
EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের প্রাইস প্রায় 300 পিপ্স নিচে নেমে আসে অর্থাৎ ওই সময়ে যদি আমরা কোনও সেল এন্ট্রি গ্রহন করতাম তাহলে নিশ্চিত প্রফিট!
কিছু সময় পর, মার্কেট প্রাইস আবার নিচের ব্যান্ডে চলে আসে এবং সেই সাথে আমরা দেখতে পাই Stochastic এর ভ্যালুও চলে আসে oversold লেভেল, যা নির্দেশ করে প্রাইস যেকোনো সময় উপরের দিকে উঠে যাবে।
এবং তাই হয়! প্রাইস আবার প্রায় 400 পিপ্স উপরে উঠে আসে। প্রফিট নেয়ার জন্য যথেষ্ট!
RSI + MACD
এই উদাহরণে আমরা একই সাথে RSI এবং MACD ইন্ডিকেটর এর ব্যবহার দেখবো-
চার্টে আমরা দেখতে পাচ্ছি, যখন RSI এর ভ্যালু overbought লেভেলে চলে যায় তখন এটি আমাদের একটি সেল/sell সিগন্যাল প্রদান করে থাকে এবং এর পরেই আমরা চার্টে MACD এর একটি ডাউন ক্রসওভার দেখতে পারি যা একটি সেল/sell এন্ট্রির নির্দেশ করে। দেখুন প্রাইস কিভাবে নিচের দিকে নেমে আসছে!
আরও কিছুক্ষণ পর, RSI এর oversold লেভেল চলে আসে এবং আমাদের একটি বাই/buy সিগন্যাল প্রদান করে। আমরা আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি MACD এর সিগন্যাল এর জন্য।
কয়েক ঘণ্টা পরেই, আমরা চার্টে MACD এর একটি আপ-ক্রসওভার দেখতে পাই যা একটি বাই/buy এন্ট্রির নির্দেশ করে। তারপরই দেখুন প্রাইস কিভাবে উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে!
আশা করি উপরের দুইটি উদাহরণ থেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে Multiple Indicator এর মাধ্যমে ট্রেডে এন্ট্রি গ্রহন করতে হয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমি কি কি ইন্ডিকেটর একসাথে ব্যাবহার করে ট্রেড করবো?
এই বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে আপনার ট্রেডিং কৌশল এবং পছন্দের উপরে। আপনার পছন্দ মতন যেকোনো ইন্ডিকেটর একসাথে ব্যাবহার করতে পারেন। তবে আমরা উপরের প্রদত্ত ইন্ডিকেটর গুলো একসাথে ব্যাবহার করতে পছন্দ করি।
Multiple Indicator এর সাহায্যে ট্রেড করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন ইন্ডিকেটর এর ব্যাবহার সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে এবং তারপর আপনি আপনার জন্য এই “Magic Combination” নির্ধারণ করবেন।
এর জন্যই আপনাদের প্র্যাকটিস ট্রেডিং সেশনে ভালো করে সময় এবং মনোযোগ দিতে হবে যাতে করে আপনি বুঝতে পারেন, কোনও ইন্ডিকেটর আপনার ট্রেডিং কৌশলে জন্য সবচেয়ে বেশী মানানসই!
আশা করি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেল সম্পর্কিত বিশেষ কোনও প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে পারেন কিংবা নিচে কমেন্ট করতে পারেন। প্রতিদিনের আপডেট ইমেইল এর মাধ্যমে গ্রহনের জন্য, নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করে নিতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো টিউটোরিয়াল দেখার জন্য অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। এছাড়াও, যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেইসবুক এবং টেলিগ্রাম চ্যানেলে। এছারাও ট্রেড শিখার জন্য জন্য আমাদের রয়েছে বিশেষায়িত অনলাইন ট্রেনিং পোর্টাল।