FXBangladesh.com – বিগত বছরের শুরু থেকেই চিন এবং যুক্তরাষ্ট্র এর মধ্যকার বাণিজ্যিক বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা, GOLD এর উপর খুব বেশী পরিমাণ প্রভাব ফেলছে যার ফলে এখন পর্যন্ত চার্টে এই মূল্যবান ধাতু এর মুভমেন্ট খুবই বেশী। যার ফলে ২০১৯ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আকাশ ছোঁয়া। যার মধ্যে জুন মাস থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই দুই মাসেই এর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় $250 যা বিগত ৬ বছরের রেকর্ড ব্রেক করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন? সর্বশেষ, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান Huawei এর সাথে আমেরিকান অন্যান্য প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যকার বিরোধ এর কারনে, চিন এবং যুক্তরাষ্ট্র এর মধ্যকার বাণিজ্যিক যুদ্ধ ক্রমশই প্রযুক্তির যুদ্ধে রূপান্তরিত হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ইতিমধ্যেই চীনা বাজারে অ্যাপেল পণ্য এর সেবা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এছারাও দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ এই ব্যানিজিক যুদ্ধকে রূপান্তরিত করছে বৈশ্বিক যুদ্ধে যার প্রভাব ইতিমধ্যেই বিশ্ব অর্থনীতিতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে বিশ্ববাজারে Safe Heaven হিসাবে পরিচিত Gold এর বাজার হয়ে উঠেছে অস্থির। অন্যদিকে, ব্রেক্সিট ইস্যুতে, ইউ এবং ব্রিটেন এর মধ্যকার টানাপড়েন স্বর্ণের দামে যুক্ত করেছে নতুন মাত্রা। যার প্রভাবে, বিনিয়োগকারীরা ক্রমশ ঝুঁকছেন নির্ভরশীল GOLD এর দিকে কেননা এই ধরনের কোনও রাজনৈতিক উত্তেজনার কারনে সবচেয়ে বেশী পরিমাণ শক্তিশালী হয় এটি। এছারাও, সর্বশেষ কয়েক দশকের মধ্যে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুলোর গোল্ড এর রিজার্ভ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে আন্তর্জাতিক এর স্বর্ণ এর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকবেশী।
বিগত বছর এর মতন এই বছরেও মূল্যবান ধাতু গোল্ড এর প্রাইস এর বেশকিছু ঊর্ধ্বমুখী প্রবনতা আমরা উল্লেখ করেছি। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রাইস বৃদ্ধি পায় $22 এবং এই সপ্তাহের শুরুতে মার্কেট গ্যাপ এর কারনে গোল্ড এর প্রাইস পৌছায় $1586 লেভেল যা বিগত ৭ বছরের মধ্যে সর্বাধিক। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন? মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এর সাথে মধ্যপ্রাচ্য এর দেশ ইরান এর যুদ্ধ-পরিস্থিতি। বিগত শুক্রবার, বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার স্ট্রাইক এর কারনে নিহত হন, ইরানের কুদস বাহিনীর প্রধান কাসিম সোলায়মানি যার প্রভাব পড়েছে গোল্ড এর বাজারে। বিদ্যমান এই যুদ্ধ পরিস্থিতি, সামগ্রিকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। আপনাদের সুবিধার জন্য বলে রাখা ভালো –
যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা, গোল্ড এর মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারন।
এখন চলুন বড় টাইমফ্রেম এর চার্টে প্রাইসের সম্ভাব্য অবস্থান দেখে নেয়া যাক –
উপরের চার্টটি গোল্ড এর Weekly টাইমফ্রেম এর একটি চার্ট যেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, প্রাইস পূর্বের বিদ্যমান চ্যানেল এর রেঞ্জ ব্রেকআউট করতে সক্ষম হয়েছে। এবং আমাদের সর্বশেষ এনালাইসিস অনুযায়ী যারা এন্ট্রি গ্রহন করেছিলেন তারা বেশকিছু প্রফিটও করতে পেরেছেন। তবে এখন গৃহীত সকল বাই পজিশন ক্লোজ করে দেয়ার পরামর্শ থাকছে।
সাপ্তাহিক এই চার্ট এনালাইসিস করতে গিয়ে আমরা খুজে পেয়েছি একটি সম্ভাব্য বেয়ারিশ ডাউভারজেন্স যা একটি পসিবল ডাউনট্রেন্ড এর নির্দেশনা প্রদান করে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে এই ধরনের একটি ডাইভারজেন্স আমরা লক্ষ্য করেছিলাম যার কারনে প্রায় $200 ডলার পরিমান মূল্য নেমে এসেছিল যা ছিল $1156 এর কাছাকাছি। সুতরাং এই ডাইভারজেন্স সিগন্যালটিও আমাদের আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান মার্কেট ট্রেন্ড অনুসারে প্রাইস আপট্রেন্ডে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এমতাবস্থায় কোনও ধরনের SELL এন্ট্রি গ্রহন না করার পরামর্শ থাকছে আপনাদের জন্য। প্রাইস এর পরবর্তী টার্গেট লেভেল হচ্ছে 1600 এর কাছকাছি এবং যদি কোনওভাবে এই লেভেল ব্রেক করতে সক্ষম হয় তাহলে, প্রাইস নতুন রেকর্ডও তৈরি করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ করা প্রয়োজন, প্রাইস ইতিমধ্যেই অনেকবেশী Overbought জোন এর মধ্যে রয়েছে যা আমরা RSI Indicator ব্যবহার করে দেখতে পারি। এমতাবস্থায় নতুন করে কোনও BUY এন্ট্রি গ্রহন না করে বিদ্যমান বাই এন্টির পজিশন ক্লোজ করে দেয়ার পরামর্শ থাকছে আপনাদের জন্য। প্রাইস এর কিছুটা নিচের দিকে নেমে আসা আবশ্যিক এবং সেটি যেকোনো সময়ই হতে পারে। যদি প্রাইস কোনওভাবে 1550 এর নিচে নেমে আসে তাহলে ডাউনট্রেন্ড ক্রমশ শক্তিশালী হবে যা আমরা হয়তোবা সামনের কয়েক সপ্তাহে দেখতে পারি।
ট্রেডিং পরামর্শ –
- Weekly টাইমফ্রেম এর জন্য এনালাইসিসটি প্রদান করা হয়েছে।
- এখনই কোনও BUY এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকুন।
- যারা ব্রেকআউট হিসাবে BUY এন্ট্রি গ্রহন করেছিলেন তাদের এন্ট্রি ক্লোজ করে দেয়ার পরামর্শ থাকছে। এখনই নতুন করে বাই এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।
- সাপ্তাহিক টাইমফ্রেমে, বেয়ারিশ ডাইভারজেন্স লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
- যদি প্রাইস 1550 এর নিচে নেমে আসতে সক্ষম হয় তাহলে ধরে নিতে পারি পরবর্তী টার্গেট 1500 এর কাছাকাছি।
- যারা SELL এন্ট্রির জন্য অপেক্ষা করে আছেন, অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করতে হবে। কমপক্ষে 1500 এর নিচে প্রাইস এর ক্লোজ হওয়া পর্যন্ত।
- প্রাইস এর নিচের দিকে বাউন্স করার সম্ভবনা অনেকবেশী। আমাদের প্রত্যাশা 1535 এবং 1515 এর কাছাকাছি।
ঝুঁকি সতর্কতা
ফরেক্স ট্রেডিং একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ মাধ্যম। প্রকাশিত এই এনালাইসিস শুধুমাত্র আপনাকে মার্কেটের বিদ্যমান একটি ধারণা প্রদানের জন্য দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র, এই এনালাইসিস এর উপর ভিত্তি করেই কোনও ধরনের ট্রেডে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার কোনও ধরনের লস/ক্ষতির দায়ভার FX Bangladesh গ্রহন করবে না। বিস্তারিত জানার জন্য অনুগ্রহ করে আমাদের Risk Warning আর্টিকেলটি পড়ে নিন।
নতুন সেবা